1. admin@banglareport24.com : admin :
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

ঘুস নিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি বাণিজ্য : ৩ কমিটি স্থগিত

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩
  • ২১৪ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :

ঘুসের অডিও ভাইরাল হওয়াসহ নানা অভিযোগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া ছাত্রলীগের তিন কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগ থেকে কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটিগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে। সোমবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

সোমবার হঠাৎ করে কলাপাড়া উপজেলা, পৌর ও সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা সভাপতি সাইফুল ও সাধারণ সম্পাদক তানভির স্বাক্ষরিত ঘোষণায় হাসিবুল হাসানকে সভাপতি ও তারিকুল ইসলাম ওরফে বাবু তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। একইভাবে রাকিবুল হাসান রাব্বিকে সভাপতি ও রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সাধারণ সম্পাদক করে কলাপাড়া পৌর এবং জসিমউদ্দিন জেতুকে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মুসাকে সাধারণ সম্পাদক করে সরকারি মোজাহারউদ্দিন বিশ্বাস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটির খবর ছড়িয়ে পড়লে কলাপাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়। নতুন কমিটির অধিকাংশ সদস্যের বিরুদ্ধে পদবঞ্চিতরা নানা অভিযোগ গণমাধ্যমের কাছে দিতে শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তারা সক্রিয় হন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার ফেসবুকে লেখেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। টাকাগুলো যে নিছেন দয়া করে ফেরত দেন, নইলে গণভবনে যাব, বাকি ডকুমেন্ট নিয়া।’ পোস্টের সঙ্গে ব্যাগভর্তি টাকা এবং টাকা দেওয়ার প্রমাণ সংবলিত কিছু ছবিও পোস্ট করেন তিনি। এ পোস্টের পাশাপাশি জেলা সভাপতি সাইফুলের সঙ্গে আশিকের মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়। সেখানে সাইফুলকে উদ্দেশ করে আশিককে পদ দেওয়ার আশ্বাসে নেওয়া টাকা ফেরত চাইতে শোনা যায়। টাকা নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে সাইফুল ধমক দিয়ে আশিককে ফোন রাখতে বলেন। পরে তিনি ফোন লাইন কেটে দেন। ভাইরাল হওয়া অপর এক অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি নাজমুল হক। পূর্ণাঙ্গ কমিটি, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে চাহিদামাফিক টাকা জোগার হয়েছে বলে তানভীরকে জানান নাজমুল। কোথায় টাকা পৌঁছে দেবেন বা এখন কী করবেন, সেটা তানভীরকে জিজ্ঞাসা করেন নাজমুল। এ সময় তানভীর বলেন, ‘পরে জানাচ্ছি’।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া কেবল দুটি অডিও রেকর্ডই নয়, কমিটিতে পদ-পদবি দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে নানাভাবে সুবিধা নিতেন জেলার সভাপতি-সম্পাদক। মেহমান নিয়ে কুয়াকাটা যাওয়াসহ তাদের নানা ধরনের ব্যক্তিগত খরচের জোগানও দিতে হতো তাদের। সভাপতি পদ দেওয়ার কথা বলে কেবল আশিকের কাছ থেকে এককালীন ১৫ লাখ টাকা নেওয়ার খবর কলাপাড়া শহরে মানুষের মুখে মুখে।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কলাপাড়া ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, স্থগিত উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তারিকুলের বাবা একসময় ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা। তার চাচা নূর বাহাদুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বড় ভাই আজিম তালুকদার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারিকুলের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের অন্তত আট নেতাকর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ আছে। এর মধ্যে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিলন পঙ্গু হয়ে গেছেন। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে। এছাড়া রাব্বি ও জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মকাণ্ডে না থাকাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে তারিকুল ইসলাম বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব তালুকদার ও কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রাকিবুল আহসানের অনুসারী হিসাবে আমি রাজনীতি করি। এ কারণে প্রতিপক্ষ গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। প্রতিপক্ষের কারণেই আমার নামে অনেক মামলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সব সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে আমি জড়িত। আমার পরিবারের সদস্যরা কে কী করল, তা দিয়ে তো আর আমার কর্মকাণ্ড বিচার করা ঠিক হবে না।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে স্থগিত উপজেলা কমিটির সভাপতি হাসিবুল হাসান বলেন, কমিটি দেওয়া আবার স্থগিত করা বিষয়ে জেলা এবং কেন্দ্র ভালো বলতে পারবে। আমরা সুবিচারের প্রত্যাশায় আছি। আশা করি, স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে আমাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, পদবঞ্চিত হয়ে অনেকে আবোলতাবোল বকছে। কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নই ওঠে না। ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সোমবার আশিক তালুকদার আমায় ফোন দিয়েছিল। তার উদ্দেশ্য ভালো মনে না হওয়ায় কথা বাড়াইনি। ফোন কেটে দিয়েছি। তবে সে যদি দাবি করে থাকে যে কমিটির জন্য টাকা দিয়েছে-তবে তা পুরোপুরি মিথ্যা।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান জানান, কলাপাড়া উপজেলার তিনটি কমিটি ঘোষণার পরপরই বেশকিছু অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। কিছু অসংগতিও পরিলক্ষিত হয়। এ কারণে সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। কোনোরকম অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ বাংলার রিপোর্ট ২৪
Theme Customized By Shakil IT Park