স্টাফ রিপোর্টার :
ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগে কর্মরত মো. ইউনুস মিয়াজীর। সম্প্রতি পায়ে আঘাত পাওয়ায় চিকিত্সার জন্য অফিস থেকে ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। বাড়িতে যাওয়ার জন্য ছেলেকে খবর দিয়ে এনেছিলেন চট্টগ্রামের কর্মস্থলে। কথা ছিল বুধবার বেতন তুলে বাবা-ছেলে দুজনে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। ঘর থেকে বের হয়ে বাবা-ছেলে বেতন তুলতে যাচ্ছিলেন; পথিমধ্যে চলন্ত লরি থেকে দড়ি ছিঁড়ে ছিটকে গিয়ে পণ্যবাহী একটি কনটেইনার বাবা-ছেলের রিকশার উপর গিয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই কনটেইনারের চাপায় পিষ্ট হয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন মোর্শেদ আলম নামে রিকশাচালক। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর ইপিজেড থানার স্টিল মিলবাজার এলাকায় কনটেইনারচাপার ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ইউনুস মিয়াজী (৫৯) চট্টগ্রাম খাদ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সাইলোতে অপরেটিভ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৭ সাল থেকে সাইলোতে কর্মরত। তার ছেলের নাম আবদুর রহিম (৩০)। ইউনুস মিয়াজীর বাড়ি চাঁদপুর জেলার বষ্ঞিপুর এলাকায়। পরিবার সেখানে থাকলেও চাকরির সুবাদে কর্মস্থলে একাই থাকতেন ইউনুস। পায়ে আঘাত পাওয়ায় একা গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে যাওয়ার সাহস পাননি। এ কারণে খবর দিয়ে বাড়ি থেকে ছেলেকে শহরে এনেছিলেন। বাবা-ছেলে দুজনে একসঙ্গে বাড়ি যাওয়ার কথা।
নিহত ইউনুস মিয়াজীর সহকর্মী ক্ষিতিশ চন্দ্র মজুমদার বলেন, কয়েক দিন আগে সাইলোতে কর্মরত অবস্থায় ইউনুস মিয়াজী পায়ে ব্যথা পান। চিকিত্সার জন্য ১৫ দিনের সিএল ছুটি নিয়েছিলেন। বুধবার সকালে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন।
ইপিজেড থানার ওসি আবদুল করিম যুগান্তরকে বলেন, লরিতে থাকা পণ্যবাহী একটি কনটেইনার দড়ি ছিঁড়ে পাশ দিয়ে যাওয়া রিকশার উপর গিয়ে পড়ে। এতে রিকশার দুই যাত্রী (বাবা-ছেলে) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত রিকশাচালককে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে লরি এবং সাজ্জাদ হোসেন নামে চালককে আটক করা হয়েছে।
এদিকে তাদের মৃত্যুতে সেভ দ্য রোড-এর পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী প্রমুখ।