স্টাফ রিপোর্টার:
নোয়াখালী সদর উপজেলার দিনমজুর ফারুক হোসেনের বসবাসের ঘর ছিনতাই করে নিয়ে গেছে অস্ত্রধারী কয়েকজন।
বুধবার (১০ মে) সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ২৯ এপ্রিল দুপুরে সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দেশি অস্ত্র হাতে কয়েকজন ফারুক হোসেনের ঘর ভেঙে ট্রাকে তুলছেন। আশপাশ থেকে চিৎকার শোনা গেলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পুরো ঘর ট্রাকে তোলার পর বাড়ির সব গাছ কেটে চারপাশে তারকাঁটার ব্যারিকেড দিয়ে দেন তারা।
ঘর ভেঙে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, দেড় শতাংশ জমিতে ঘর করে ২০ বছর ধরে স্ত্রী পাখি বেগমকে নিয়ে বসবাস করছি। ২৯ এপ্রিল একদল সন্ত্রাসী আমার ঘর ভেঙে নিয়ে যায়। তার পর থেকে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাড়ির জমিটি আমাদের কেনা। আমার বাবা মৃত আবুল হাশেমের সঙ্গে মৃত মোহাম্মদ উল্যাহর জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। আদালতের রায় অনুযায়ী আমরা দেড় শতাংশের মালিক। তাই দেড় শতাংশের ওপর ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছি। কোনো কথা ছাড়াই মোহাম্মদ উল্যাহর ছেলে মাসুদ, জসিম, জাবেদসহ বেশ কয়েকজন আমাদের ঘর ভেঙে নিয়ে যায়। ঘরে থাকা মালামালও নিয়ে গেছে।ফারুক হোসেন বলেন, আমি একজনের মাছের খামারে কাজ করি। সেই খামারের মাছের রেণু কেনার সাড়ে ৩ লাখ টাকা আমার ঘরে ছিল। সে টাকাও তারা নিয়ে গেছে।
ফারুক হোসেনের স্ত্রী পাখি বেগম বলেন, অস্ত্রের মুখে আমরা এগোতে পারিনি। ঘরের স্বর্ণালংকারসহ সবকিছু তারা নিয়ে গেছে। আমরা ৯৯৯-এ ফোন দিয়েছিলাম। পুলিশও এসেছিল। কিন্তু আমরা ১২ দিন ধরে ঘরছাড়া। ছেলেমেয়ে নিয়ে অসহায় অবস্থায় আছি।এওজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন বলেন, ভিডিওটা আমিও দেখেছি। বর্বর যুগের মতো এভাবে ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। যদি সঙ্গে সঙ্গে জানতাম তাহলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক।
অভিযুক্ত জাবেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নোয়ান্নই ইউনিয়নের জুনায়েদ হোসেন ও তার বড় ভাই মাসুদের সঙ্গে কথা না বলে নিউজ না করার অনুরোধ করেন। নিজেদের ঘর দাবি করে জাবেদের বড় ভাই মাসুদ বলেন, ২০১২ সালে আমরা জায়গাটি কিনেছি। যে ঘরটি ভাঙা হয়েছে তা আমাদের।
তিনি দাবি করেন, ফারুক চোর ও চাঁদাবাজ।নোয়ান্নই ইউনিয়নের জুনায়েদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সালিশি হয়েছে। তবে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আমি ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করতে বলি নাই।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।