স্টাফ রিপোর্টার:-
সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর গত সোমবার বিকেলে সিলেটে যান মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির মহড়া নিয়ে তিনি শহরে ফেরেনসিলেট সিটি নির্বাচনে ‘ঘরের মানুষই’ আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে এখন একটাই প্রশ্ন—গত নির্বাচনের মতো এবারও কি দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীকে নিজ দলের নেতাদের ‘অপ্রকাশ্য’ বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিগত দুটি নির্বাচনে সিলেটে দলের প্রার্থী জয় পাননি। তাই এবার নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে চান। অতীতের তুলনায় বর্তমানে সিলেটে দল সবচেয়ে ঐক্যবদ্ধ বলে তিনি দাবি করেন।
অবশ্য মনোনয়নবঞ্চিত ও মহানগর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলছেন ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে মনের কথা পেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মহানগরের রাজনীতিতে সক্রিয় নন, এমন একজন প্রবাসী নেতা মনোনয়ন পাওয়ায় ভেতরে-ভেতরে অনেকে ক্ষুব্ধ। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাঁদের ক্ষোভের ‘বহিঃপ্রকাশ’ ভোটে পড়তে পারে।
১৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সিলেটে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে। তিনিসহ দলের ১১ জন নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। গুঞ্জন আছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল আনোয়ার আলাওর ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হতে পারেন। যদিও ১১ মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে তিনি ছিলেন না।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। নির্বাচনের পরপরই এমন অভিযোগে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী পাঁচ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছিল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এবার প্রকাশ্য বিরোধিতা না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা ভোটের মাঠে নিষ্ক্রিয় থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গত দুটি সংসদীয় নির্বাচনে সিলেট-২ (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) আসনে দলের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। গত ২২ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে মেয়র পদে প্রথমবারের মতো নির্বাচনের কথা জানান। স্থানীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডিঙিয়ে আনোয়ারুজ্জামান মনোনয়ন পাওয়ায় এখন দুটি প্রশ্ন সামনে চলে আসছে। প্রথমত কেউ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হবেন কি না এবং দ্বিতীয়ত মনোনয়নবঞ্চিতরা তাঁর পক্ষে কাজ করবেন কি না।