স্টাফ রিপোর্টর :-

কথাকথিত সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, বহুবিবাহে অবস্ত, চাঁদাবাজ, ধান্ধাবাজ, প্রতারক, রাজাকারের নাতনী, বরগুনা জেলার পাথারঘাটা থানার তালুকের চরধনি গ্রামের মৃত শাহাদাৎ শিকদারের মেয়ে শাহনাজ পারভীন (৪৫)। প্রতারণা করাই তার মুল পেশা।

সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য। তথাকথিত আইপিটিভি (ইউটিউব), অনলাইন নিউজপোর্টাল ও যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, প্রেস লেখা স্টিকার, আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছে ওইসব সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তি। অথচ তাদের কোনো অনুমোদন নেই, নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা পরির্বতন করেই হয়ে যান সাংবাদিক,মাছের পোনা বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, মুদি দোকানদার, হলুদ মরিচ বিক্রেতা, সুদের কারবারি, ব্যাটারি বিক্রেতা, ডাক্তারের সহকারী থেকে রাতারাতি সাংবাদিক হয়ে দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন অলিতে গলিতে এই নামধারী সাংবাদিকরা। কোন নিউজ লিখতে না পারলেও তারা বড় সাংবাদিক, গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কথিত এই সাংবাদিকরা।

বাল্যবিবাহ, মারামারি, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, পরকিয়া,মেম্বারের অনিয়ম ছাড়া অন্যকোন জনস্বার্থের সংবাদে এই সাংবাদিকদের দেখা মিলে না।

তারা শুধু ইউটিউব ও ফেসবুকে একটি প্রোফাইল তৈরি করে সেটিকে টিভি চ্যানেল অথবা নিউজপোর্টাল হিসেবে ঘোষণা করে প্রচার করে হচ্ছে। এমনকি নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সঙ্গে জড়িতরাও সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে সর্বত্র। এ ছাড়াও শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা সংবাদ লিখতে না জানলেও নামসর্বস্ব কিছু পত্রিকার কার্ড কিনে রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে সাংবাদিক। গত এক বছর যাবৎ ভুয়া সংবাদকর্মীদের তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে এরা যেখানে-সেখানে অবাধে বিচরণ করছে এরকম কয়েকশ ভুয়া সাংবাদিক। করে যাচ্ছে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড। এসব নীতিহীন কর্মে বাড়ছে গুজব, অপপ্রচার, বিভ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

কথাকথিত সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে শাহনাজ পারভীন রাজধানী ভাটারা, বাড্ডা, খিলক্ষেত ও গাজীপুর মহানগরে বিভিন্ন এলাকায় দাবিয়ে বেড়ায়। খোঁজ খবর নিয়ে জানায় যে, ফরিদপুর জেলার ইউনুসের সাথে তার প্রথমে বিবাহ হয়। ঐ স্বামীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হলে পরবর্তীতে সাগর নামে এক ব্যাক্তি কে বিবাহ করে, কয়েক বছর পরে এই স্বামী সাগর শাহনাজের ছোট বোনকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করে । তার পর মাসুদ নামে আরো এক ব্যাক্তিকে বিবাহ করিয়া ঢাকা কুড়িল চৌরাস্তা এলাকায় চলে আসে।

তার লেখাপড়া তেমন না থাকলেও সে মোবাইল চালানো বেশ দক্ষ ও প্রতারণার কৌশলে বেশ অভিজ্ঞ। ঢাকা আসিয়া কুড়িল চৌরাস্তায় প্রথমে বাড়ি বাড়ি জ্বিয়ের কাজ, হোটেলে প্লেট ধোওয়ার কাজ, ব্যাটারীর দোকানে কাজ, ফুটফাতে চা বিক্রি করে, একসময় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করে তারপর হয়ে উঠে সাংবাদিক। নিজের নাম ঠিকানা ঠিক মত লিখতে না জানা শাহনাজকে একটা মহল সাংবাদিক বানায়। আর এই সাংবাদিক কার্ড ও ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে একটি চক্র তৈরি করে চাঁদাবাজী শুরু করে। এই চাঁদাবাজী করতে গিয়ে কয়েকবার ধরা পরে এবং চাঁদাবাজীর মামলায় জেলখাটে। বর্তমানে তার নামে প্রতারণা ও চাঁদাবাজীর একাদিক মামলা চলমান।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায় যে, শাহনাজ ২০১৭ সালের ১৪ এপ্রিল মাসে বাবুল মিয়া নামে একজনের সাথে তার বিয়ে হয় এবং ঠিকমত ভরণ-পোষণ ও খোঁজ-খবর না নেওয়া বাবুল মিয়ার ঠিকানায় ১৫/০৫/২০১৯ সালে উকিল নোটিশ পাঠান । সূত্র আরো জানায় যে, গাজীপুর চৌরাস্তায় আরেক প্রতারক ও চাঁদাবাজ মো: আব্দুস সোবহান নামের এক ব্যাক্তির যোগসূত্রে হাজী নুরুল হকের ৭২ শতাংশ মার্কেট জমি ভুয়া ক্ষমতা পত্র তৈরি করে জোড় পূর্বক চাঁদাবাজী করে আসছে। এমনকী হাজী নুরুল হকের নামে একটি অবৈধ কাবিন নামা সৃজত করে নিজেকে হাজী নুরুল হকের স্বামী দাবী করে প্রতারণা করে আসছে। আমাদের অনুসন্ধান টিম অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরো কিছু ভয়ংকর তথ্য বের করে আনে, শাহনাজ নিজের মেয়েকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করিয়ে বিভিন্ন পুরুষকে ফাসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়, শাহনাজের বোন রুপসী হিজরা, সাথে আরো হিজরা নিয়ে তাদেরকে এইসব কাজে সহযোগিতা করে।

শাহনাজ তার নিজের মেয়েকে দিয়েও একাদিক পুরুষের সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলে এক সময় তাদের সাথে অনৈতিক সর্ম্পক করিয়ে ভয়বীতি দিখিয়ে চাঁদাবাজী করে। যাহার একাদিক প্রমাণ আমাদের অনুসন্ধান টিমের হাতে এসেছে। মাত্র ২০ বছর বয়সে সে তার মেয়েকে চার বিয়ে করিয়ে কিছু দিন পর তালাক দিয়ে কাবিনের টাকা আদায় করে নেয়। একাদিক বিয়ে করে কাবিনের টাকা হাতিয়ে নেওয়া শাহনাজ এবং শাহনাজের মেয়ে উভয়ে আরেকটি পেশা তাহারা সাইবার প্রেমে বেশ পটু, শাহনাজের পিতাও এক ডজনের বেশি বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ আছে। সামপ্রতিক শাহনাজ সাহায্যের নামে বিভিন্ন ব্যানার বানিয়ে প্রবাসীদের কাছে ফেসবুকে বুস্ট করে, মিথ্যে অভিনয়ে নতুন প্রতারণায় অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এখানে সে উল্লেখ করে বলে যে, সে কিডনী রোগী, মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে গেছে আবার সে ব্রেস্ট ক্যানসার, ব্লাড ক্যন্সারে আক্রন্ত আবার এতিম শিশুদের নামে সাহায্য চেয়ে আবেদন করে। এই বিষয়ে শাহনাজের মোবাইলে ফোন দিয়ে এর সতত্যর একাদিক রেকডিং পাওয়া গেছে ও বেশ কিছু ব্যানার ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে ছড়িয়ে পড়েতে দেখা যায়।

শাহনাজ কথায় কথায় মানুষকে মিথ্যে মামলার হুমকী প্রদান করে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে। তার কাজে তাকে সাহায্য করার জন্য কিছু উকিল ও সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে রেখেছে এবং এই উকিল ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় সে প্রতারণা করার উৎসাহ পায়। কিছুদিন আগে সে জনপ্রিয় ব্যাক্তি বেরিষ্টার সুমন, অভিনেতা ডিপজল সহ অনেক গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে সাহায্যের নামে ধরণা দিয়েছে এবং তার নিজের ফেসবুকে এই বিষয়ে একাদিক ভিডিও সে ছেড়েছে। তার সর্ম্পকে তার বাসায় আশে-পাশে তথ্য জানতে গেলে, নাম না প্রকাশে কয়েকজন বলেন বড় ফ্লাট নিয়ে একা সে বাসায় থাকে, প্রতিদিন বিভিন্ন পুরুষ-মহিলা তার বাসায় আসা-যাওয়া করে। প্রতিবেশীরা জানান যে, কিভাবে একা একটি ফ্লাট ভাড়া নিয়ে থাকে তার আয়ের উৎস কি আমাদের জানা নেই । আসা-যাওয়া লোকদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে সাংবাদিক শাহনাজের কাছে তাদের ভিন্ন ভিন্ন কাজ থাকে তাই তারা আসে। আমাদের অনুসন্ধান টিম উক্ত বিষয়ে শাহনাজের কাছে মুটো ফোনে জানতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে বলে কত সাংবাদিক লাগবে সে নিয়ে আসবে, নেক্স টাইম যেন তাকে আর ফোন না দেওয়া হয়ে আর ফোন দিলে সে দেখে নিবে বলে হুমকী দেয়। অভিযোগ আছে যে শাহনাজ তার নিজের হিজরা বোন রুপসীকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে থাকে আর বলে কাপড় খুলে রেখে ছেড়ে দিবে রাস্তায়।