* গর্ভের প্রথম তিন মাস : গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস রোজা না রাখাই উত্তম। এ সময় মায়ের গর্ভে অনাগত শিশুর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হতে থাকে। তাই এসময় মায়ের শরীরে সঠিক মাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণে পুষ্টি, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পানি ইত্যাদির পর্যাপ্ত সরবরাহ জরুরি। তাছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যেহেতু গর্ভবতী মায়েদের বেশি বমি বমি ভাব হয়, মাথা ঘুরায়, খেতে কষ্ট হয় ও ওজন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে তাই এ প্রথম তিন মাস রোজা না রাখাই ভালো।
* গর্ভের মধ্যবর্তী তিন মাস : গর্ভকালীন মাঝের তিন মাস কিছুটা রিলাক্স থাকে। কারণ মধ্যবর্তী তিন মাসে গর্ভবতী মায়েরা একটু ভালো অনুভব করেন। আর এ সময়ের মধ্যেই বাচ্চাটির গঠনও তৈরি হয়ে যায়। তাই ইচ্ছা করলে যদি অন্য কোনো সমস্যা না থাকে এ সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভবতী মা রোজা রাখতে পারেন। যাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের রোজা না রাখা ভালো।
* গর্ভের শেষ তিন মাস : শেষের তিন মাস গর্ভবতী মাকে খুবই সতর্ক হয়ে চলা উচিত। যেহেতু এ সময় মায়ের পেটে বাচ্চা দ্রুত বাড়ে তাই গর্ভবতী মা ও তার অনাগত সন্তানের পুষ্টি নিশ্চিত করতে মাকে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশ্রাম নেয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া খুবই জরুরি। তাই এ সময় রোজা না রাখাই উত্তম। আবার অনেকের ডায়াবেটিস থাকে, প্রেশার থাকে, রক্তশূন্যতা থাকে সেক্ষেত্রে রোজা রাখলে ঠিকমতো ওষুধ খাওয়া এবং এ রোগগুলো কন্ট্রোল করা খুবই কঠিন হয়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ ক্যালরির প্রয়োজন হয় বলে একজন গর্ভবতী মাকে দিনে ছয়বার বা তারও বেশি খেতে বলা হয়। গরমকালে রোজা রাখলে সাধারণত শীতকালের চেয়ে অধিক সময় (প্রায় ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টা) পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। এ দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা গর্ভবতী মায়ের জন্য কষ্টকর। গরমে গর্ভবতী মা প্রচুর ঘেমে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে। পানিশূন্যতা থেকে অনেক সময় প্রস্রাবে ইনফেকশন, বাচ্চার নড়াচাড়া কমে যাওয়া, প্রিটারম লেবার ইত্যাদি নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। কেউ যদি শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করেন রোজা রাখার পরে, তবে তা ভেঙে ফেলবেন। কাফফারা হিসাবে ইসলামী বিধান অনুযায়ী অন্য একজনকে রোজাদার ইফতার করান বা টাকা দিয়ে দিতে পারেন।