জা হা ঙ্গী র আ ল ম :
এখনো ভাষার দাবী ওঠে রাজপথে
বক্তৃতায় মুখরিত হয় প্রতিবাদী উচ্চারণ,
অভিযোগের তীর ছুটে রাষ্ট্রের দিকে
এখনো ভাষা নিগৃহীত অবজ্ঞার পরিহাসে।
এখনো ভাষা নীরবে কাঁদে,
আঁচলে মুখ ঢেকে মুছে নেয় অশ্রুর নোনাজল।
মায়াবী চাহনিতে চেয়ে থাকে কোটি সন্তানের মুখে,
বেদনায় আহত হৃদয়ে অবিরাম রক্তঝরে।
এখনো রাষ্ট্রের চোখে মায়ের ভাষা অনাদৃত,
এখনো ভিনদেশি ভাষার পরকীয়ায়
জন্ম নেওয়া শাবকদের তীক্ষ্ণ ঠোঁটের
ধারালো ছোবলে মায়ের ভাষা ক্ষতবিক্ষত।
এখনো মায়ের ভাষা সর্বত্র হয়নি অবারিত,
এদেশে ক্রমাগত ভিনদেশি ভাষার শিলাবৃষ্টি
মগজে আঘাত হানছে অবিরত।
এখনো বিদ্রূপে অট্টহাসে শহীদী আত্মার লোহিত কফিন,
ভাষাশহীদের সম্মিলিত আত্মা
একুশের প্রথম প্রহরে শহীদমিনারে এসে জমায়েত হয়,
বিক্ষোভে বিদ্রোহ করে।
শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত করে পিচঢালা রাজপথ,
তাদের বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
তারা কৃত্রিম পুষ্পমাল্য গলে নেবে না।
তাদের দ্রোহের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে
পড়ে রাজধানীর রাজপথে,
কৃষ্ণচূড়ার ডালেডালে জ্বলে ওঠে
ক্ষোভের লেলিহান আগুন,
শিখা চিরন্তন হয়ে জ্বলে অবিরাম।
অতৃপ্ত আত্মার পোড়া নিঃশ্বাস
বুলেটের মতো অভিসম্পাত করে বর্ষণ।
যারা মায়ের ভাষা নিয়ে তামাশায় মেতেছে,
খোলসের আড়ালে পরিধান করেছে
ভিনদেশি ভাষার চাকচিক্যময় উর্দি।
যারা ভুলে গেছে বায়ান্নের রক্তঝরা ইতিহাসের ইতিকথা,
যারা ভুলে গেছে বিশ্বমানচিত্রে
স্বাধীন বাঙ্গালি জাতিসত্তার পটভূমি,
চেতনার মূলমন্ত্র।
যারা স্বার্থের নেশায় জাগ্রত ঘুমে মশগুল,
তাদের পাপিষ্ঠ পদস্পর্শে শহিদবেদি
হয়েছে অপবিত্র।
ভাষাশহীদের রক্তেলেখা শ্বেতপত্রে
অভিযুক্ত রাষ্ট্র,
জবাব তোমায় দিতে হবে।
রাখঢাক না করে অকপটে বলো,
বায়ান্নের অমর আত্মদান,
শহীদের পবিত্র রক্ত
রাষ্ট্রের রন্ধ্রেরন্ধ্রে কতটা সমাদৃত?